বাংলাদেশের পাখি : সুন্দরী হাঁস
এই সুন্দর পাখিটির নাম সুন্দরী হাঁস। সুন্দরবনে থাকে বলেই দক্ষিণ সুন্দরবনে এমন নাম। গােলবনে বেশি থাকে বলে বলা হয় গােইলাে হাঁস, শুদ্ধ ভাষায় গােলবনের হাঁস। ইংরেজি নাম মাড Masked Finfoot। |
খালটার দু'পাশ জুড়েই নিবিড় গােলবন। ফাকে ফাকে কেয়া ও হেতালের দুর্ভেদ্য ঝােপ। দু'পাড়ের গােলপাতা হাত বাড়িয়ে খালের ওপরে যেন চাঁদোয়া তৈরি করেছে। মরানির সরু খালটা যেন সুড়ঙ্গের মতাে ঢুকে গেছে বনের ভেতরে। ভরদুপুরেও রােদ পড়ে না জলে। সুন্দরবনের জেলে বাওয়ালি মৌয়ালেরা এই ধরনের খালে নৌকা ঢোকানাের আগে বনবিবির নাম স্মরণ করে, দক্ষিণরায়ের নামও জপে। বনবিবি হচ্ছেন সুন্দরবনের রানী। দক্ষিণরায় বাঘের দেবতা।
আর সুন্দরবনের পাহারাদার ও মহারাজা হচ্ছে বাঘ-দ্য রয়েল বেঙ্গল টাইগার। এই ধরনের সরু বা মনি খালের পাড়ে ওঁৎ পেতে থাকে বাঘ। বাগে পেলেই হুঙ্কার ছেড়ে লাফিয়ে পড়ে নৌকায়, মানুষ তুলে নিয়ে চলে যায় গভীর বনে ।
সুন্দরবনে নদী-খালের অভাব নেই। কিন্তু সবচেয়ে বিপজ্জনক হচ্ছে এই সব মনির খাল। ভাটার সময় এই সব খালে জলের একটা সরু ধারা থাকে মাত্র। না হলে থাকে তিরতিরে জল। ছােট নৌকাও চলতে চায় না। তখন। জোয়ারের সময় নৌকায় দাড়িয়ে দু'পাশের বনে চোখ রাখা চলে, বাঘ ওৎ পেতে আছে কিনা, তাও পরখ করার সুযােগ থাকে। কিন্তু ভাটার সময় জল নেমে যাওয়ায় তা সম্ভব হয় না। বাঘ যদি লাফ দেয়, ঘাড়ে পড়ার আগে টের পাওয়া যায় না।
তবুও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এইসব খালে নৌকা নিয়ে ঢোকে জেলে বাওয়ালি ও মৌয়ালেরা। গােলপাতা, লাকড়ি কাটে, গরমকালে কাটে মৌচাক । সুন্দরবই জেলে বাওয়ালি ও মৌয়ালদের বেঁচে থাকার একমাত্র ঠিকানা। সুন্দরবনে ঢােকে আরাে কিছু মানুষ, যারা শুধু সাহসীই নয়, দুঃসাহসীও। ওরা হরিণচোর, হরিণ শিকারি। সুন্দরবনের কোনাে একটা বিশেষ এলাকা বা তার চেয়েও বেশি এলাকা ওদের মুখস্থ থাকে। ওই এলাকার নদী-খালও থাকে ওদের মুখস্থ।
কোথায় গেলে ছিটকে ফঁাদ ও জালের ফঁাদে আটকানাে যাবে হরিণ। হরিণেরা কখন কোথায় বেশি থাকে, তাও জানে ওরা। ওদের অনেকের থাকে পােষা বানর। বানরকে নিয়ে গাছে ওঠে, কেওয়ার ফল-পাতা সুন্দরবনের দুনিয়াখ্যাত ফোটা হরিণের খুবই প্রিয় খাদ্য। বানর ডাকে, কেওড়ার পাতা ছিড়ে ফেলে তলায়, হরিণরা এসে খায় । সুন্দরবনের হরিণ ও বানরের সখ্যের কথাও দুনিয়াখ্যাত। পােষা বানরকে কাজে লাগিয়ে চোরা শিকারিরা হরিণের পালকে কাছে টেনে আনে। বানরের ডাক নকলও করতে জানে ওইসব চোরা শিকারিরা।
লেখার শুরুতে যে মরানির খলিটার কথা বলা হয়েছে, ওই খালটার ভেতরে নৌকা ঢোকার আগে শরণখােলার টিসিও (থানা কো-অপারেটিভ অফিসার) তার ১৪ বছর বয়সী ছেলেটার হাত চেপে ধরলেন ডান হাতে। টেনে বসালেন একবারে কোলের কাছে। ছােট নৌকাটির দু'পাশে দু'জন মাঝি, মাঝখানে দাঁড়ানাে আরেক জন শিকারি। চোরাশিকারি কাশেম আলী দাঁড়ান খালি হাতে। টিসিও সাহেবের বা হাতে লােড করা বন্দুক। সবাই সতর্ক।
চৌদ্দ বছরের ছেলেটি ভয় বােঝে নি, জীবনে প্রথম সে সুন্দরবন দেখছে। মুগ্ধতায় আবিষ্ট সে। বাঘ যে কী জিনিস তা সে জানে না, জানলে বাঘ দেখতে আসত না। সে দাঁড়াতে চাইছে। বাবা ইশারায় নিষেধ করছেন। নৌকার কেউই কথাবার্তা বলছে না। দুনিয়া থেকে এক টানেল ধরে নৌকা যেন এগিয়ে চলেছে গোপন গৃঢ় কোনাে রহস্যলােকে। বিস্মিত বালক হা-করে গিলছে সুন্দরবনের সৌন্দর্য। পোষা বানরটি ঝিমােচ্ছে। ওকে আনা হয়েছে হরিণের পালকে কাছে আনার জন্য কাজে লাগাতে । শিক্ষিত বানর। বাঘ যদি ওঁৎ পেতে থাকে মানুষের আগেই ও টের পাবে। দেখে ফেলবে। সিগন্যাল দেবে চেচিয়ে।
অনেক গভীরে আসার পর সামনের মাঝি আচমকা বৈঠা ঠেকাল। ভাটা শুরু হয়েছে। খালের জল দৌড়ে চলেছে নদীর দিকে। সাগরও এখান থেকে খুব বেশি দূরে নয়। আচমকা নৌকা থামানােয় সবাই প্রথমে ভাবল, বাঘ!
, সামনের মাঝি আঙুল উচিয়ে আনুমানিক ৫০ হাত দূরের পাখিগুলােকে দেখল। বাবা তার ছেলের কানে ফিসফিস করে বললেন, ‘সুন্দরী হাঁস'। দাঁড়ানাে বন্দুকধারী ছেলেটি বাবার দিকে ফিরে ইশারায় বােঝালগুলি করবে কিনা। ছেলেটির বাবা ইশারায় জানাল–না। নৌকা আবার চলতে শুরু করল। কৌতূহলী বালক অবাক বিস্ময়ে দেখছে হাঁসগুলােকে। পুরাে শরীর দেখা যাচ্ছে না। ডুবাচ্ছে পােষাহাঁসের মতাে। পাঁচটি হাঁস বড়। চারটি তুলতুলে ছানাও আছে দলে। ওরা ডুবাচ্ছে না। তবে সুযোগ পেলেই বাবামার পিঠে চড়ে বসছে। কিন্তু পিঠে নিয়ে আদর করার সময় ওদের নেই। বাচ্চাদের মওকা না দিয়েই ডুব দিচ্ছে বা পিঠ থেকে ঝেড়ে ফেলছে।
বাংলাদেশের পাখি : সুন্দরী হাঁস |
শেষ বিকেলে ফিরতিপথ ধরল নৌকা। হরিণ জোটে নি। নৌকায় শুধু দুটি বনমােরগ ও একটি মুরগি । পাঁচটি ডিম বাসা থেকে পাওয়া। হরিণ না পাওয়া হতাশা সবার ভেতরে। দাঁড়ানো শিকারি বহুবার তার বন্ধু টিসিও সাহেবকে সুন্দরবনে এনেছে। হরিণ না নিয়ে ফেরে নি কোনােবার। আজ আবার তার ছেলে এসেছিল, প্রথম যাত্রা, সেই ভাতিজা হরিণ না নিয়ে ফিরলে বাপ-চাচার মান সম্মান থাকে! বাদল চাচা তাই বালককে বারবার আশা দিচ্ছে। শরনখােলায় ফেরার আগে সন্ধ্যা নামবে। হরিণ মারবই, অন্ধকারে টর্চের আলােয় তােমাকে আমি শত শত হরিণের হীরকের মতাে জ্বলন্ত চোখ দেখাব খােকন।
ফেরার পথে সেই মরানি খালের ঠিক সেই পয়েন্টে এসে দেখা গেল সকালবেলার সেই গােইলাে হাঁসগুলাে চরছে। বাচ্চা চারটিও আছে। মাঝি সাবধানে গােলপাতার বাড়ানাে পাতাগুলাের তলা দিয়ে হাত তিরিশেক দূরত্বের ভেতর নিয়ে নৌকা থামাল। ছেলেটির বাবা দাঁড়িয়ে গুলি করলেন। একটি হাঁস ভুস করে ডুব দিল। বাকি চারটি বড় হাঁস কর্কশ স্বরে অনেকটা দাঁড়কাকের গলা-সাধার মতাে ক্রোওক ক ক করক করক' ভয়ার্ত ডাক ছাড়ল।
একটি ছানা জলের ওপরে চিৎ হয়ে পড়া তেলাপােকার মতো বো বো করে ঘুরতে লাগল। একটি বড় পাখি জল ছুঁয়ে সরলরেখায় দ্রুত বেগে উড়ে এল নৌকার দিকে, নৌকা ও মানুষ দেখে এতটা ঘাবড়ে গেল যে, অ্যাবাউট টার্ন করতে গিয়ে গােলপাতায় আঘাত খেয়ে ধপাস করে জলে পড়ল, তারপর উড়ে গিয়ে আছড়ে পড়ল ডানপাশের গােলবনে। হাওয়া হয়ে গেল। ডুব দেওয়া পাখিটি ভেসে উঠল ভুস করে। মারা গেছে। তুলতুলে ছানাটিও স্থির। বড় তিনটি পাখি তিনটি ছানা নিয়ে যে পথে উঠে গেছে সেখানে নেমে পড়ল ছেলেটির বাবা এবং মাঝিরা।
অভিজ্ঞ এক মাঝি অনেক খোজাখুজি করে কেয়াকাটার ঝােপের গভীরে খুঁজে পেল বাসা। লম্বা-চওড়ায় প্রায় ১ ফুট ১০ ইঞ্চি বাসাটি পুরু নয় বেশি, উপবৃত্তাকার বা ডিমের মতাে আকার। বাসায় আছে একটি মাত্র ডিম, লম্বাটে ধরনের। আশ্চর্য! ডিম আর বাসার ধরন-গড়ন প্রায় একই রকম। বাসার বাইরে খােসা পড়ে আছে। মাঝি ডিমটা তুলল, কানের কাছে নেড়ে বলল, পচে গেছে। তবুও ডিমটা। রাখল আবার বাসায়। ডিমের রঙ ঘােলাটে সবুজ।
সরু ও সূক্ষ্ম কালচেবাদামি টান লম্বালম্বি। ডিমের মােটা অংশের কিছুটা ঘন সবুজ। সরু অংশের দিকে সাদাটে ভাবটা বেশি। ছিটছােপ ঘন । কৌতূহলী বালক বাসা দেখল, ডিমটি ছুঁয়ে দেখতে গিয়ে ভেঙে ফেলল। দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ল। কেয়াপাতায় হাত মুছতে গিয়ে হাতে বিধল কাটা। বাসাটি ছিল নুয়ে-পড়া একটি মরা গোলপাতার ওপরে। উপকরণ হচ্ছে, শুকনাে কেয়াপাতা ও সরু আঁশ, মরা গােলপাতা, ছনঘাস এবং সুন্দরী ও কেওড়ার সরু ডালপালা । বাসাটি টেনে তুলতে গিয়ে দেখা গেল আটকে আছে। টেনে-ছিড়ে তােলা হল। বাসার তলায় শুকনাে কাদা। মাঝি বলল, কাদা এনে এরা আগে রাখে, তারপর বাসা করে, যাতে বাসা ঝড়বৃষ্টিতে উড়ে না যায়। নৌকায় ফিরে পাখি আর বাচ্চাটিকে হাতে নিল বালক। উল্টে-পাল্টে দেখল। প্রশ্নের পর প্রশ্ন করে জেনে নিল নিচের তথ্যগুলাে।
১, বছরে দু'বার বাসা করে।
২. জোয়ারের জল উঠবে না, উঠলেও বাসা ডুববে না, এ রকম জায়গা নির্বাচন করে।
৩, বাসা বেশি বেশি বাঁধে কেয়াঝোপে। তারপরের পছন্দ গোলগাছের গােড়া বা গােড়ার কাণ্ড।
৪. ঘাসবন বা বড়গাছের গােড়া অথবা শুলােবনের ভেতরটায়ও বাসা করে।
৫. জোড় বাঁধে বাসা বাঁধার আগে। দুজনে মিলে বাসা করে। ডিম পাড়ে ৪/৫টি।
৬. দু'জনে তা দেয় । আনুমানিক ১ মাস পর ডিম ফোটে। বাচ্চারা জনের ১ ঘন্টার ভেতরই মা-বাবার সঙ্গে জলে নামে, সাতরায়।
৭, ডিম-বাচ্চার বড় শত্রু হচ্ছে মেছােবাঘ ও চিতাবিড়াল। ডিমখেকো সাপেরাও ডিম-বাচ্চা গেলে। সুযােগ পেলে বা-ঈগলেরা বাচ্চা তুলে নেয়। গুইসাপ আর ভোদড়ও ডিম-বাচ্চার বড় শত্রু।
৮, না পারতে গােইলাে হাঁসেরা ডাকাডাকি করে না।
৯, ভীত স্বভাবের । খোলা জায়গায় সহজে যায় না।
১০, ছােট বাচ্চার রঙ থাকে বাদামি-কালচে। যত বড় হয়, ততই কালচে ভাবটা কমে আসে।
১০, ছােট বাচ্চার রঙ থাকে বাদামি-কালচে। যত বড় হয়, ততই কালচে ভাবটা কমে আসে।
বালক গল্প শুনতে শুনতে পাখি ও পাখির ছানা দেখল মন ভরে। চোখ দেখল। ঠোট ফাক করে দেখল । ডিমের রঙ দেখল, আগে কোনােদিন দেখে নি।
এবার সুন্দরবনের এই সুন্দর পাখিটির পরিচয় জানা যাক। নাম সুন্দরী হাস। সুন্দরবনে থাকে বলেই দক্ষিণ সুন্দরবনে এমন নাম। গােলবনে বেশি। থাকে বলে বলা হয় গােইলাে হাঁস, শুদ্ধ ভাষায় গােলবনের হাঁস। ইংরেজি নাম Masked Finfoot।
ঠোটের আগা থেকে লেজের ডগা পর্যন্ত মাপ ৫৪-৫৭ সেন্টিমিটার। গলার তল থেকে বুক পর্যন্ত কালাে। কপাল-কপােলও কালাে। বুক-পেট সাদাটে বাদামি। পা ও পায়ের আঙুল হলুদরঙা—তাতে সবুজ আভা। চোখের মণি কালো। মণির পাশের বৃত্তটা আলতা-লাল। ঠোটের রঙ কমলা-হলুদ। ডানা বুজানাে অবস্থায় পিঠের রঙ কালচে বাদামি খয়েরি। ঘাড় ও মাথা টেরঙা। চোখের পাশ থেকে সাদা একটি টান নেমেছে গলার উপরিভাগ পর্যন্ত। লেজের নিচের রঙ গাঢ় ছাই, সবমিলে পাখিটিকে হাঁস বলেই মনে হবে দূর থেকে। চালচলনও সে রকম।
তবে জলে যখন ভাসে, হাঁসের মতাে পুরাে শরীর ওপরে থাকে না। শুধু ঠোট-মাথা-চোখ জলের ওপরে রেখেও চলতে পারে। ডুবসাঁতারে ওস্তাদ। লেজ ও ডানার পালক ছাড়া শরীরের অন্যান্য পালক মােলায়েম ও পেলব । মাথার তালুর পালক বেশি মােলায়েম, ফোলা ফোলা । ভয় পেলে ওই পালকগুলাে একটু জেগে ওঠে এবং আনন্দেও। যেসব শিশু-কিশাের সুন্দরবনে বেড়াতে গেছে, তাদের অনেকেই হয়তাে এই পাখিটিকে দেখেছে। তবে ভীতু বলে ঝট করে লুকিয়ে পড়ে, সহজে দেখা যায় না। থাকে নদী ও খালের পাড়ের গােল কেয়া হেতাল বনে। প্রয়ােজনে মূর্তির মতাে নিথর হতে পারে।পােষা পাতিহাঁসের খাদ্য তালিকায় যা যা পড়ে, সুন্দরী হাঁসও তাই তাই খায়। তবে সুন্দরবনে যা পাওয়া যায়। শুনেছি ধান-চাল পেলেও খায়।
ঠোটের আগা থেকে লেজের ডগা পর্যন্ত মাপ ৫৪-৫৭ সেন্টিমিটার। গলার তল থেকে বুক পর্যন্ত কালাে। কপাল-কপােলও কালাে। বুক-পেট সাদাটে বাদামি। পা ও পায়ের আঙুল হলুদরঙা—তাতে সবুজ আভা। চোখের মণি কালো। মণির পাশের বৃত্তটা আলতা-লাল। ঠোটের রঙ কমলা-হলুদ। ডানা বুজানাে অবস্থায় পিঠের রঙ কালচে বাদামি খয়েরি। ঘাড় ও মাথা টেরঙা। চোখের পাশ থেকে সাদা একটি টান নেমেছে গলার উপরিভাগ পর্যন্ত। লেজের নিচের রঙ গাঢ় ছাই, সবমিলে পাখিটিকে হাঁস বলেই মনে হবে দূর থেকে। চালচলনও সে রকম।
তবে জলে যখন ভাসে, হাঁসের মতাে পুরাে শরীর ওপরে থাকে না। শুধু ঠোট-মাথা-চোখ জলের ওপরে রেখেও চলতে পারে। ডুবসাঁতারে ওস্তাদ। লেজ ও ডানার পালক ছাড়া শরীরের অন্যান্য পালক মােলায়েম ও পেলব । মাথার তালুর পালক বেশি মােলায়েম, ফোলা ফোলা । ভয় পেলে ওই পালকগুলাে একটু জেগে ওঠে এবং আনন্দেও। যেসব শিশু-কিশাের সুন্দরবনে বেড়াতে গেছে, তাদের অনেকেই হয়তাে এই পাখিটিকে দেখেছে। তবে ভীতু বলে ঝট করে লুকিয়ে পড়ে, সহজে দেখা যায় না। থাকে নদী ও খালের পাড়ের গােল কেয়া হেতাল বনে। প্রয়ােজনে মূর্তির মতাে নিথর হতে পারে।পােষা পাতিহাঁসের খাদ্য তালিকায় যা যা পড়ে, সুন্দরী হাঁসও তাই তাই খায়। তবে সুন্দরবনে যা পাওয়া যায়। শুনেছি ধান-চাল পেলেও খায়।
সুন্দরবনে বেড়াতে গেলে বাঘ হরিণ খোঁজা বা দেখার জন্য চোখে যখন বাইনােকুলার তুলবে শিশু-কিশােরেরা তখন সুন্দরী হাঁসও খুঁজবে বলে আশা করি আমি। খুব সুন্দর পাখি । আজো আমি সুন্দরবনে গেলে হন্যে হয়ে দেখতে চাই সুন্দরী হাঁস। বারবার দেখেও যে সাধ মেটে না!