বাংলাদেশের পাখি : কোড়া ( জল মোরগ)

বাংলাদেশের পাখি : কোড়া ( জলমোরগ)
বাংলাদেশের পাখি : কোড়া ( জল মোরগ)

বাচ্চা চারটির বয়স এখন চার মাস চলছে। হাবাগােবা ভাবটা রয়ে গেছে আজো, চালচলনেও আনাড়িভাব। সুন্দর চোখে সব সময় যেন একটা ভয় লেগে থাকে। চার ভাইবোেন সব সময়েই পাশাপাশি কাছাকাছি থাকে। কেউ একটু দূরে সরে গেলে অন্যরা চাপাস্বরে তাকে কাছে ডাকে। রাতের বেলায় হােগলা বা নলখাগড়ার ঘন ঝােপের ভেতরে পাশাপাশি আশ্রয় নেয়। শরীরে শরীর মিশিয়ে মাটিতে বুক-পেট ঠেকিয়ে ঘুমায়। এখন শীতকাল, তাই পিঠের পালকের ভেতর ঠোট গুঁজে রাখে। তাতে শীত কম লাগে। এদের নাকের ছিদ্রটা বেশ বড়, জোরালাে বাতাস ঢুকলে চাপা বাঁশির শব্দের মতাে ওঠে। তাতে ওদের শীতও বেশি লাগে ।

বাচ্চা চারটির মা-বাবাও রাতে আশ্রয় নেয় একই এলাকায়। কিন্তু মাবাবার ভেতরে এখন যােগাযােগ নেই। দুজনের কেউই বাচ্চাদের আদর সােহাগ তাে করেই না-আদর সােহাগ পাবার জন্য মা বা বাবার দিকে এগােলে তারা গলা উঁচিয়ে ভয় দেখায়, তেড়ে আসে। বাচ্চা চারটি বুঝে উঠতে পারে নি যে, বাবা-মা এই সেদিনও তাদের ভালােবাসত, খাবার।

চিনিয়ে দিত, পাখার আড়ালে রাখত বিপদ-আপদে, সেই মা-বাবা কেন এখন এমন করছে?
এইতাে সেদিনের কথা। দু’ভাইবােন মিলে মা-বাবার পেছনে পেছনে উড়ে এই বিলের পথে পাড়ি জমিয়েছিল। দূরত্ব তাে কম কিছু ছিল না। প্রায় ৫ কিলােমিটার পথ। বেশ নিচু দিয়ে মা-বাবার পেছনে পেছনে পাশাপাশি সারি বেঁধে আসছিল এদিকে। বাচ্চা ছ'টির পাখা ক্লান্তির ভারে অসাড় হয়ে আসছিল। দু'ভাইবেন তখনাে জানত না-কোথায় চলেছে তারা।

ক্লান্ত পাখায় উড়তে উড়তে একসময় মা-বাবা নেমেছিল একটি ঝাউগাছের মাথায়। মিনিট পনেরাে জিরােবার পর গাছতলায় এসেছিল একজন মানুষ। মা-বাবা তখন গলা লম্বা করে ভয়ে ভয়ে দেখছিল নিচের দিকে। তখনই প্রচণ্ড শব্দ। গুলি করেছিল লােকটি। সাথে সাথে ঝট করে উড়াল দিয়েছিল মা-বাবা। বাচ্চারাও উড়ল, কিন্তু তারা দেখল, তাদের এক ভাই মাটিতে মুখ থুবড়ে পড়েছে। তখন ওরা ৫ জন। আরাে অনেকটা পথ পাড়ি দেবার পর পথে পড়েছিল ছােট একটা নদী। 

ওই নদীটা পাড়ি দেবার সময় আকাশের অনেক ওপর থেকে জেটবিমানের মতাে সাই সাই শব্দে নেমে এসেছিল একটি কুড়াবাজ। পাক খেতে খেতে এসেই সে আরেক ভাইকে নখরে গেঁথে ফেলেছিল। ভাইটির সে কী কান্না কয়েকটি পালক খসে বাতাসে ঘুরপাক খেতে খেতে নিচের দিকে নামছিল। ভাইটি মুক্তির জন্য পাখা ঝাপটাচ্ছিল। ঈগলটি চলে যাচ্ছিল অন্যদিকে। আরাে কিছু সময় ওড়ার পরে চার ভাইবােনের নজরে পড়েছিল বিশাল এই বিলটি। বিলের যেন শেষ নেই। জল আর জল। ওপরে বিশাল খােলা। আকাশ। 

কত রকম পাখি যে ওরা দেখতে পাচ্ছিল। চার ভাইবােন অবাক যেমন হয়েছিল এত রকমের জলের পাখি দেথে, তেমনি ঘাবড়ে গিয়েছিল। পাখিদের সংখ্যায়। এই প্রথম দেখা। ডুবুরি, পানকৌড়ি, জুলপিপি, সাপপাখি, ধূসর বক, ঢেণ্ডা, চা-পাখি, জিরিয়া, রেইল, ক্রেক, জলমুরগি, সরালি হাঁস, বড় সাদা-বক, কালিমসহ আরাে কত পাখি। চার ভাইবােন আগে আর দেখে নি। দেখে নি এ রকম বিশাল বিল। দেখবে কীভাবে? এদের জন্মস্থানটা তাে ছিল একটা ধানের মাঠ । 

জন্মেই প্রথম দেখেছিল সবুজ ধানগাছ আর জল। পেয়েছিল জলের গন্ধ । দেখেছিল মাথার ওপরের খােলা আকাশ। আর সেই আকাশে উড়ন্ত বাজ, চিল ও বালিহাঁস। যে বাসায় জন্মেছিল দু’ভাইবােন, সে বাসাটা ছিল বেশ পুরু, আরামদায়ক। বড়সড় গােলগাল ধরনের বাসাটা ছিল শরঘাস, কাশের ডগা আর ধানপাতা দিয়ে তৈরি, ছিল বেশ লুকানাে জায়গায়, ধানক্ষেতে চওড়া ও উঁচু আইলের ভেতরে।

বাংলাদেশের পাখি : কোড়া ( জলমোরগ)
এই জলের পাখিটির নাম কোড়া। জলমােরগও বলা যায়। ইংরেজি নাম Watercock বৈজ্ঞানিক নাম Gallicrex cinerea মাপ ৪৪ সেন্টিমিটার। খুবই সুন্দর পাখি। লম্বা পা, লম্বাটে ঘাড়। সাধারণ সময়ে পুরুষ ও মেয়েপাখি দেখতে একই রকম। মেয়েপাখির শরীরের মাপ হচ্ছে ৩৯ সেন্টিমিটার।


ছায়া ছিল একটা জিয়লগাছের—যেটার গােড়া ছিল জলে ডােবা। আশেপাশে ছিল শােলাগাছ আর কলমিলতার ঘন দাম। জিয়লগাছটা না থাকলে আকাশটা ওরা দেখতে পেত সরাসরি।

বাচ্চা দুটির বয়স যখন হয়েছিল মাত্র ২/৩ দিন, তখন ওরা বাসা ছেড়ে নেমে পড়েছিল জলে। আহা! জলের ছোঁয়া কী মিষ্টি। জলজ উদ্ভিদ, ধান, কাশ, কলমি ও শোলাগাছের কী আশ্চর্য জলজ দ্বাণ। ছ'ভাইবােন আনন্দে একেবারে মাতােয়ারা হয়ে গিয়েছিল। এত মজা রেখে এতদিন তারা বোেকার মতাে বাসায় বসেছিল!

মা-বাবার পেছনে পেছনে ঘুরতে ঘুরতে ছ'ভাইবােন শিখে ফেলেছিল বিপদ থেকে বাঁচার কৌশল। এই ধানের মাঠের নানান রকম জলের পাখিকে ফেলেছিল চিনে। যেমন বালি হাঁস, ডাহুক, কানিবক। চিনেছিল খাবার। তারপর ওদের বয়স যখন হয়েছিল ২৫/২৬ দিন তখন একদিন ওরা পাখা মেলে উড়েছিল। আহা! ওড়ার এত আনন্দ। কিন্তু মা-বাবার হুঁশিয়ারিতে ওরা ওড়ার অনুমতি আর পায় নি। শিখে ফেলেছিল যে না-পারলে উড়তে নেই, তাতে নানান বিপদ ঘটতে পারে।

সবচেয়ে বেশি ভয় মানুষকে, তারপরে গুইসাপ আর ভোদড়কে। বিপদে একদিন অবশ্য পড়ে গিয়েছিল এক ভাই আর এক বােন। মাছের জন্য পেতে রাখা জালে গলা দিয়ে আটকে গিয়েছিল ওরা। অনেক টানাটানির পরে অবশ্য মুক্তি পেয়েছিল। আরেকদিন একটু খােলামতন জায়গায় বেরুতেই আকাশ থেকে ডাইভ মেরেছিল একটি সাগরঈগল উল্টে গিয়ে ঘাসবনে ঢুকে না পড়লে উপায় ছিল না সেদিন। এতসব বিপদ-আপদের মধ্যেও চলছিল বেশ। 

প্রতিদিনই শিখছিল নতুন নতুন কিছু। কিন্তু যেটা ওরা বুঝতে পারে নি, সেটা হচ্ছে, ওরা যে ডিমের ভেতর থেকে বেরিয়েছিল সে ডিমের রঙ কেমন ছিল। ওরা তাে জানেই না ওরা ছিল ডিমের ভেতর। কেননা, ডিমের খােসা মা-বাবা ওদের জন্মাবার পরপরই লে ফেলে দিয়েছিল। ওরা জানে না, মা-বাবা কত কষ্ট করে এই ধানের মাঠের ভেতর বাসা বাঁধার জায়গা খুঁজতে ঘােরাঘুরি করেছিল তিন দিন। তারপর দু'জনে মিলে অনেক কষ্টে বাসাটি সাজিয়েছিল ৫ দিনে। শেষে মা ডিম পেড়েছিল, আর সে ডিমের খােসা ছিল মেটে রঙের, ওপরে ছিল লালচে ছিটছােপ। মা-বাবা পালা করে ২৩ দিন তা দেবার পরই না ডিম থেকে বেরিয়েছিল দু'ভাইবােন! তখন ভাদ্রমাস।

কার্তিকের শেষ দিকে মাঠের জলে টান পড়ল। জায়গায় জায়গায় মাটি জেগে উঠল। ধানের চারায় রঙ লাগল। তারপরও দু'ভাইবােন মা-বাবার সঙ্গে রয়ে গিয়েছিল ওই মাঠে। অগ্রহায়ণের মাঝামাঝি সময়ে যখন মাঠ প্রায় শুকিয়ে গেল, ধান কাটার জন্য মানুষ নামতে শুরু করল মাঠে, তখন আর ওখানে থাকা নিরাপদ মনে করল না মা-বাবা। 

তাছাড়া ধান কেটে নেবার পর শুকনাে মাঠে খাবার যেমন জুটবে না, তেমনি থাকবে না নিরাপত্তা। এ রকম সময়েই ছ'ভাইবােনকে নিয়ে দূরে পাড়ি জমিয়েছিল মা-বাবা। যেখানে যাচ্ছে সেখানে শীত-গ্রীষ্মেও জল থাকে, খাবার মেলে, আছে নিরাপদ আশ্রয়; নানান রকম জলজ উদ্ভিদ, বড়বড় ঘাসবন, হােগলাবন, আরাে কত কী!

ক্লান্ত ডানায় চার ভাইবােন যখন অবাক চোখে দেখছে নানা রকম পাখি, বিশাল বিল, তখন মা-বাবা নেমে পড়েছিল একটা হােগলাবনের পাশে। নেমেছিল চার ভাইবােনও। বিলের ওপরে চক্কর দিচ্ছিল সরালি হাঁসের ঝাক, উড়ছিল ৰাজ-ঈগল আর শালিক, ফিঙে, কসাইসহ কতরকম পাখি। অবাক চোখে দেখছিল চার ভাইবােন।।

বাংলাদেশের পাখি : কোড়া ( জলমোরগ)
বাংলাদেশের পাখি : কোড়া ( জল মোরগ)

আস্তে আস্তে বিলের আশপাশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিয়েছিল তারা। বুঝে ফেলেছিল এটাই হচ্ছে তাদের স্থায়ী আস্তানা। বর্ষাকালে বিশাল এই হাওড় যখন জলে টইটম্বুর হয়, তখন খাদ্য যেমন থাকে না তেমনি  দেখা হয়। তেড়ে যায় মারতে। ওরা যেন বলে, মারবে কেন বাছারা! আমরা তাে তােমাদের দেশে এসেছি বেড়াতে। আমাদের দেশে এখন দারুণ শীত। খাদ্যের অভাব।

 তাইতাে চলে এসেছি তােমাদের কাছে। এসাে আমরা মিলেমিশে থাকি। আমরা সূরাই তাে জলের পাখি । জলই আমাদের ঠিকানা। সময় হলেই আমরা ফিরে যাব। তােমাদেরকেও যেতে হবে অন্য কোথাও। বাহারা! ডিম-বাচ্চা তুলে আগামী বছর যখন তােমরা ফিরে আসবে এখানে, তখন আবারাে দেখা হবে আমাদের সাথে । এইতাে নিয়ম। শীত ফুরাল। গরমকাল এল। বিলে জল রইল। ফিরে গেল পরিযায়ী পাখিরা। এল বর্ষাকাল। তখন চার ভাইবােন আর একসঙ্গে থাকে না। বড় হয়ে গেছে। যার যার মতাে থাকে। চার জন চার জনের মতােই পাড়ি জমাল গ্রামের ধানের মাঠগুলাের দিকে।

এক ভাই এসে নামল সেই ধানের মাঠে, গত বছর ভাদ্রে যেখানে তার জন্ম হয়েছিল। বেশ বড় মাঠ। ধান আর ধান। ওই মাঠে এসেছে আরাে ক’টি পাখি। একই প্রজাতির।

ভাই-পাখিটির তখন কেবলই গলা খুলে ডাকতে ইচ্ছে করে। তাের, ভরদুপুর আর সন্ধে নামার আগে। সে গলা ফুলিয়ে মাথা দুলিয়ে ‘টুব, টুব টুব’ শব্দে জোরে জোরে ডাকে। সে ডাক ছড়িয়ে পড়ে বহু দূর। আশেপাশের মানুষ বুঝতে পারে মাঠে কোড়া পাখি এসে গেছে।

হাঁ, বেশ বড়সড় এই জলের পাখিটির নাম কোড়া। জলমােরগও বলা যায়। ইংরেজি নাম Kora, Water Cock। বৈজ্ঞানিক নাম Gallicra cinerea। শরীরের মাপ ৪৪ সেন্টিমিটার। খুবই সুন্দর পাখি। লম্বা পা, লম্বাটে ঘাড়। সাধারণ সময়ে পুরুষ ও মেয়েপাখি দেখতে একই রকম। মেয়েপাখির শরীরের মাপ হচ্ছে ৩৯ সেন্টিমিটার।

এক নজরে কোড়া হচ্ছে বাদামি রঙের পাখি। মাথার চাঁদি কালচে। পাখার প্রান্তের পালকগুলাে কালাে। বাদামি পিঠের ওপর কালচে কালচে ছােপ আছে। বুকে আড়াআড়িভাবে অস্পষ্ট কালচে কালচে সূক্ষ্ম দাগ। পেট ও লেজের তলায় ওই পাথালি দাগ বেশি ঘন ও স্পষ্ট। লেজের আগ তীর্যক। ভয়ে ও আনন্দে ওই লেজ ঘন ঘন দোলায়।

বাংলাদেশের পাখি : কোড়া ( জলমোরগ)
বাংলাদেশের পাখি : কোড়া ( জল মোরগ)


বাসা যখন বাধে তখন পুরুষ পাখিটির রঙ যায় বদলে। ঘাড়, চিবুক ও পিঠ কালাে হয়ে যায়। গলা, বুক ও পেটের রঙও হয়ে যায় কালচে। ওই সময় পুরুষ কোড়াকে ভারি সুন্দর দেখায়। চোখ হয় বেশি উজ্জ্বল। ডাকাডাকিও বেড়ে যায় বাসা বাঁধার আনন্দে।

কোড়ার, বিশেষ করে পুরুষ কোড়ার কপালের আলতার মতো লাল রঙের শক্ত বর্মটি ওর সৌন্দর্য বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। বর্ষটি আবার কপালের ওপরে প্রায় ৪ সেন্টিমিটারর মতাে বাড়ন্ত থাকে, যাকে মনে হয় চোখ শিং। হাঁ, শিং-ই বটে। লড়াইয়ের সময়ে (পুরুষে পুরুষেই লড়াই হয়, কেননা প্রতিটি পুরুষ কোড়া একটা নির্দিষ্ট এলাকা নিয়ে রাজত্ব করে। 

তার রাজত্বে অন্য পুরুষ কোড়া ঢুকলেই লড়াই লেগে যায়।) কপালের ওই বর্ম আর শিং ওরা ব্যবহার করে। ও রকম লড়াই আমি গাছে বসে দেখেছি। সামান্য ঠোকাঠুকির শব্দও শােনা যায়। মেয়ে কোড়ারও বর্ম আছে। তবে সেটা হােট, মাথার ওপরে জেগেও থাকে না। | কোড়ার চোখের রঙ লাল। লম্বা পা ও পায়ের লিকলিকে লম্বা চারটে আঙুলের রঙও লাল। ঠোটও লাল। জিভের রঙ পান্না-সবুজ।

পায়ের আঙুল লম্বা হওয়ায় ওরা জলজ উদ্ভিদের ওপর দিয়ে যেমন হাঁটতে পারে তেমনি প্রয়ােজনে ডুব-সাহারও দেয়। অসম্ভব চালাক। এই কোড়া পাখিরা ঘাস, পাটক্ষেত, ধান ক্ষেতের ভেতর দিয়েই কেবল হেঁটে বেড়ায় । না-পারতে উড়বে না। বিপদের গন্ধ পেলে লম্বা লম্বা পা ফেলে দ্রুত হেঁটে দূরে সরে যাবে। বাচ্চা হবার খুশিতে প্রচণ্ড রকম ডাকাডাকি করে, সেজন্য মানুষ বুঝে ফেলে বাসাটি কোন এলাকায় আছে এবং সহজেই তারা বাসা খুঁজে ডিম ও বাচ্চা নিয়ে যায়। 

কিশােরবেলায় আমি নিজেও বহুবার কোড়ার ডিম এনে ভেজে খেয়েছি, বাচ্চা পুষেছি। ভালাে পােষ মানে এবং পােষা কোড়া দিয়ে বুনাে কোড়া শিকার করা যায়। বাংলাদেশে পােষা কোড়া আজো আছে। তবে, কমে গেছে আগের চেয়ে । ভালাে পােষ মানলে ছেড়ে দিয়েও পােষা যায়। প্রভুর ইশারায় উড়ে গিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে বুনাে কোড়ার ওপর। লড়াই বাধে এবং পায়ে পা আঁকড়ে ধরে, হাড়ে না সহজে। এমনিতেই কোড়ারা তুখােড় লড়াকু পাখি। 

ওরা খায় কচি কচি জলজ ঘাস, গুল্ম, ধান ও ঘাসের বীজসহ পােকা-মাকড়, শামুক ব্যাঙ ইত্যাদি। | আজ থেকে ৩০ বছর আগেও বাংলাদেশে প্রচুর কোড়া ছিল, কমে গেছে অনেক। এখন আর শাওন-ভাত্রে শােনা যায় না ওদের উচু কষ্ঠের মনভুলানাে সুরেলা ডাক। কমে গেছে ওদের আবাসভূমি, মরছে শিকারিদের হাতে। উপকারী এই পাখিটিকে টিকিয়ে রাখা বড়ই জরুরি, নইলে বিলুপ্ত হয়ে যাবে ওরা।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url