বাংলাদেশের পাখি : হট্টিটি
জমিদার বাড়ির সীমানা যেখানে শেষ, সেখান থেকে শুরু বিশাল একটি মাঠের। বলতে গেলে বাড়িটার চারপাশ জুড়েই খােলামাঠ। এখন এই ফাল্গুন মাসে মাঠটি শুকনাে । ধানের নাড়া, বাঘজামা' নামের ছােট ছোট নরম গাছ, নানান রকম ছােট ছােট ঘাস জন্মেছে মাঠ জুড়ে। আছে উচু উচু চওড়া ঘাসের আইল। মাঠের ভেতরে আছে কিছু কিছু উঁচু জমি, ওসব জায়গাগুলােতে চমৎকার সব ঝোপ, আছে দু’পাঁচটি তাল-খেজুর গাছ। এখন এই ফাল্গুনে মাঠটির রঙই যেন গেছে বদলে। মাঠের চারপাশ জুড়ে গাছপালার সবুজ দেয়াল।। এখন এই বসন্তকালে মাঠজুড়েই ফুটেছে নাকফুল ও কানের দুলের মতাে লাল-হলুদ ঘাসফুল। নীলচে রঙের বাঘজামা' ফুলও ফুটেছে। আর শুকনাে মাঠ পেয়ে কত রকম মাঠের পাখি যে এসে জুটেছে! কসাই, নীলকণ্ঠ, মেঠোছাতারে, ভরত, পিপিট ও ধানটুনি।
আইলের ঘাসের গােড়ায় বাসা বাঁধে ধানটুনিরা। ভরত-পিপিট বাসা করে আইলের ভেতরে। ওদের জন্য তাই এই মাঠটি এখন স্বর্গরাজ্য। মাঠের ভেতরে হেঁটে হেঁটে ওরা খাবার খায়। রাতে আশ্রয় নেয় আইলের ভেতরে, ছােট ছােট ঘাসঝোপ ও ধানের নাড়ার ভেতরে। মাঠের কিনারের ওই জমিদার বাড়িতে কিছু বুনাে কবুতরও থাকে। ওই কবুতরের লােভে, কবুতরের বাচ্চাদের লােভে ওখানে নিয়মিত টহল দেয় বনবিড়াল ও গেছাে খাটাসরা, দিনে আনাগোনা করে কিছু শিকারি পাখি। তাে সেই বসন্তকালেরই এক সকালে একটি বড় সড় বাজপাখি এসে বসল উঁচু একটি নারকেল গাছের মাথায়।
জমিদার বাড়ির ছাদের দিকে সে তাকিয়ে রইল লােভী দৃষ্টিতে। গলাটা এই লম্বা করছে, এই গুটিয়ে নিচ্ছে। ছাদের পুরু কার্নিশের ওপর নামবে কিনা ভাবছে। কেননা, শিকারের সন্ধান সে পেয়ে গেছে ছাদের ওপরে । কিন্তু বিপদও আছে। যা হয় হবে—এ রকম ভাব নিয়ে যেই না বাজটি নেমে এসে বসল কার্নিশের ওপরে, অমনি ‘গেলরে গেল—নিলরে নিল' চিৎকার দিয়ে ছাদে বুক মিশিয়ে বসে থাকা চমৎকার গড়নের সাদাকালাে পাখিটি উড়াল দিল-ধেয়ে গেল বাজটির দিকে। মাথা নিচু করে বাজটি ঠোকর এড়াল, ঘাবড়েও গেল একটু। উড়ন্ত পাখিটি ঘুরে আবারাে ধেয়ে এল। সে কী গলার জোর ওর! যেন-বা ডাকাত পড়েছে, এভাবে চেঁচিয়ে ও পুরাে এলাকা সরগরম করে ফেলেছে।
ওর চিৎকারের শব্দ ছড়িয়ে পড়ছে বহুদূর। চিৎকার শুনে ওর সঙ্গীও উড়ল মাঠের ভেতর দিয়ে-ওখানে ও খাবার সন্ধানে হেঁটে বেড়াচ্ছিল, দ্রুতবেগে উড়ে আসতে লাগল ও চেঁচাতে চেঁচাতে। ওই চেচানি শুনে মাঠের অপর প্রান্ত থেকে উড়ালি দিল এক জোড়া নীলকণ্ঠ পাখি, চেঁচাতে চেঁচাতে ওরাও ঝড়ের বেগে এসে পড়ল জমিদার বাড়ির মাথার ওপরে। ঘাবড়ে গেল বাজটি। ৪টি পাখি যেভাবে সােরগােল তুলেছে, ডাইভ মারছে বারবার মাথা-পিঠ লক্ষ্য করে, আর ওই সােরগােল চেঁচামেচি শুনে এসে জুটছে শালিক-বুলবুলফিঙেরা, তাতে আর কার্নিশে বসে থাকা বুদ্ধিমানের কাজ মনে করল না বাজটি। যেই উড়াল দিল, অমনি ‘ধরধর-মারমার' শব্দে ৪টি পাখি তাে বটেই, অন্য পাখিরাও ধাওয়া করল ডাকাতকে—ছােট ও মাঝারি পাখিদের ডিম-বাচ্চা লুট করা এই বাজটি পাখির রাজ্যে সত্যিই ডাকাত। কিছু ঠোকর আর আঁচড় হজম করার পরেও সে বসল অন্য একটি উচু নারকেল গাছের পাতার ওপরে। না, টিকতে পারল না তবুও। ওই ৪টি পাখি আর একটি ফিঙে তাকে নাস্তানাবুদ করার পরে উড়ল সে আবার। উঁচুতে উঠে পালিয়ে গেল মাঠ পাড়ি দিয়ে ।
তখন ছাদের লম্বা পাওয়ালা পাখি দুটো তাে বটেই, নীলকণ্ঠ দুটোও এসে বসল ছাদের পুরু কার্নিশের ওপর। সবকিছু ঠিকঠাক মতাে আছে বুঝে নীলকণ্ঠ দুটো ফিরে চলল আবার আপন আস্তানার দিকে। লম্বা হলুদ পা ওয়ালা পাখি দুটো নেমে পড়ল এবার ভােলা ছাদে। মেয়ে পাখিটি এগিয়ে। এসে দাঁড়াল তার ছাদের বাসার পাশে, ঠোট রাড়িয়ে আদর করল ৩ ঘন্টা বয়সী হানাটিকে আদর পেয়েই এতক্ষণে নড়েচড়ে উঠল ছানাটি। এতক্ষণ সে মাটির ঢেলার মতাে পড়ে ছিল চুপচাপ। মায়ের বিপদ সঙ্কেত পাবার পরেই সে সহজাত প্রবৃত্তিতে পেয়ে গিয়েছিল বিপদের গন্ধ । বাসায় পড়েছিল স্ট্যাচু হয়ে। বাবা পাখিটিও ছানাটিকে দেখল গর্বিত চোখে । তারপর গেলাম। গেলাম, তাড়াতাড়ি আসব’ বলল দু’বার, উড়তে উড়তেও একই কথা বলল, চলে গেল মাঠের দিকে।
মা পাখিটি ঠোট নামিয়ে একে একে উল্টে-পাল্টে নিল বাসার তিনটি ডিম । তারপর দু'পা ছড়িয়ে বাসার ওপরে দাঁড়াল, শরীরে ও বুক-পেটের ললামে ঝাকুনি তুলল অল্প। বুক-পেটের নরম পালকের ভেতর যেন একটা চমৎকার ফোকর তৈরি হয়ে গেল। ওই ফেঁাকরের ভেতর অদৃশ্য হল ছানাটি, তখন আস্তে সে বসে গেল ডিম তিনটি পেটের তলায় নিয়ে। বসার ভঙ্গিটি খুবই চমৎকার। আজ সন্ধ্যার আগেই বাকি তিনটি ডিম ফুটে বাচ্চা হয়ে যাবে। ডিমের খােসাগুলাে পুরুষ পাখিটি ঠোটে ধরে ফেলে দিয়ে আসবে। দূরে। ব্যস, ৪টি ছানাকে নিয়ে তখন দুজনে মিলে খুব আনন্দেই দিন। কাটাবে।
এই আনন্দ তৈরির জন্য দু'জনকে কী কম কষ্ট করতে হয়েছে! এই খােলা ছাদের ওপরেই এরা বাসা করে আসছে গত তিন বছর ধরে। বাসাটিও খাসা বটে! মাঠ থেকে দু'জনে মিলে নিয়ে এসেছিল ছােট ছােট মাটির ঢেলা । সাজিয়েছিল বৃত্তাকারে গােল করে—একখানা পেতলের থালা যেন। অপেক্ষাকৃত বড় বড় ঢেলাগুলাে ছিল বাইরের দিকে, ভেতরের দিকের ঢেলাগুলাে ছােট ছােট ।
এই হচ্ছে বাসা। গােলগাল এই বাসাটিকে সাজাতে দু'জনের সময় লেগেছিল ৬ দিন। তারপরে বৃত্তের মাঝখানে ডিম পেড়েছিল মেয়ে পাখিটি। ২ দিনে ৪টি ডিম। সেই ডিমে পালা করে দুজনেই তা দিয়েছিল ২৩ দিন। ২৩তম দিন সকালে ফুটেছিল প্রথম ছানাটি—যাকে পালকের ফোকরে আগলে রেখে বাকি ৩টি ডিম তা দিচ্ছে এখন মা। একটু আগে ডাকাত পাখিটি আসায় কী ধকলটাই না গেছে!
এখানে একটি বিষয় বিশেষভাবে লক্ষণীয়। চেঁচামেচি শুনে দূর থেকে চেঁচাতে চেঁচাতে উড়ে এসেছিল দুটি নীলকণ্ঠ পাখি। আমার বিচারে চেঁচামেচিতে নীলকণ্ঠ হচ্ছে বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন পাখি ।
নীলকণ্ঠ মাঠের পাখিছাদের বাসায় বসা এই পাখিটিও মাঠের পাখি। স্বভাব-চরিত্র, খাদ্য ইত্যাদিতে যথেষ্ট মিল আছে এর নীলকণ্ঠের সঙ্গে। চেঁচামেচিতেও সে নীলকণ্ঠের চেয়ে কম যায় না। আমার দীর্ঘ পর্যবেক্ষণ জীবনে আমি এই দু'টি পাখির ভেতরে আশ্চর্য রকমের সহমর্মিতা লক্ষ করেছি। একের বিপদে অন্যে এগিয়ে আসবেই। এমন কি চিৎকার না শুনেও বহুদূর থেকে ওড়াউড়ি করতে দেখেও এই দু'জাতের পাখি পরস্পরের বিপদের আলামত পেয়ে যায়, ছুটে যায় উর্ধ্বশ্বাসে—এই পাখিটির বিপদে যেমন একটু আগে ছুটে এসেছিল নীলকণ্ঠ দম্পতি। তেমনি নীলকণ্ঠের বিপদ দেখলেও ছুটে যাবে এরা। অবশ্য বাসায় যদি ডিম-বাচ্চা থাকে, তাহলে একটি পাখি যাবে, একটি থাকবে বাসা পাহারায় ।
খােলা মাঠের এই দু'জাতের পাখি বড়সড় যে কোনাে মাঠ থাকলে সে মাঠের অন্যান্য ছােট জাতের পাখিতাে বটেই, নিরীহ বড় ও মাঝারি পাখিরাও নিশ্চিত থাকে—বিপদের গন্ধ পেলেই এই দু'জাতের পাখি বিমান হামলার সাইরেন হিসেবে কাজ করে। শত্রু দেখলেই এরা সাইরেন বাজিয়ে দেয়, সে সাইরেন ছড়িয়ে পড়ে বহুদূর পর্যন্ত। সতর্ক হয়ে যায় অন্য পাখিরা।
বিশেষ করে এই পাখিটি মাঠে নামা মেছােবিড়াল, গুইসাপ, বনবিড়াল, শিয়াল, খাটাস, বিষধর সাপ, খেকশিয়াল ইত্যাদি মাংস ও পাখির ডিম-বাচ্চা খেকো প্রাণীদের মাথার ওপরে ঘুরে ঘুরে ওড়ে, পিছু নেয় আর তারস্বরে চেঁচাতে থাকে, সুযােগ পেলে ডাইভ মারে। মাঠের অন্যান্য পাখি জেনে ফেলে শত্রুর অবস্থান। বড় জাতের শিকারি পাখিরা এই পাখিদের অনুসরণ করে; বিষধর সাপ, গুইসাপের বাচ্চা তুলে নিয়ে যায় নখরে গেঁথে । বিপদ দূর না হওয়া পর্যন্ত এই পাখিরা সাইরেন বাজিয়েই চলে। সাইরেনের শব্দের সঙ্গে অনায়াসে মিলিয়ে নেয়া চলে ‘হটে যা হটে যা, হটলি হটলি?' নীলকণ্ঠের মতাে এরাও ডিম-বাচ্চা হবার পরে টানটান টেনশনে থাকে সর্বক্ষণ, বিপদের গন্ধ পাওয়া মাত্রই সাইরেন বাজিয়ে দেয় আশপাশটা কাপিয়ে।
নীলকণ্ঠ মাঠের পাখিছাদের বাসায় বসা এই পাখিটিও মাঠের পাখি। স্বভাব-চরিত্র, খাদ্য ইত্যাদিতে যথেষ্ট মিল আছে এর নীলকণ্ঠের সঙ্গে। চেঁচামেচিতেও সে নীলকণ্ঠের চেয়ে কম যায় না। আমার দীর্ঘ পর্যবেক্ষণ জীবনে আমি এই দু'টি পাখির ভেতরে আশ্চর্য রকমের সহমর্মিতা লক্ষ করেছি। একের বিপদে অন্যে এগিয়ে আসবেই। এমন কি চিৎকার না শুনেও বহুদূর থেকে ওড়াউড়ি করতে দেখেও এই দু'জাতের পাখি পরস্পরের বিপদের আলামত পেয়ে যায়, ছুটে যায় উর্ধ্বশ্বাসে—এই পাখিটির বিপদে যেমন একটু আগে ছুটে এসেছিল নীলকণ্ঠ দম্পতি। তেমনি নীলকণ্ঠের বিপদ দেখলেও ছুটে যাবে এরা। অবশ্য বাসায় যদি ডিম-বাচ্চা থাকে, তাহলে একটি পাখি যাবে, একটি থাকবে বাসা পাহারায় ।
খােলা মাঠের এই দু'জাতের পাখি বড়সড় যে কোনাে মাঠ থাকলে সে মাঠের অন্যান্য ছােট জাতের পাখিতাে বটেই, নিরীহ বড় ও মাঝারি পাখিরাও নিশ্চিত থাকে—বিপদের গন্ধ পেলেই এই দু'জাতের পাখি বিমান হামলার সাইরেন হিসেবে কাজ করে। শত্রু দেখলেই এরা সাইরেন বাজিয়ে দেয়, সে সাইরেন ছড়িয়ে পড়ে বহুদূর পর্যন্ত। সতর্ক হয়ে যায় অন্য পাখিরা।
বিশেষ করে এই পাখিটি মাঠে নামা মেছােবিড়াল, গুইসাপ, বনবিড়াল, শিয়াল, খাটাস, বিষধর সাপ, খেকশিয়াল ইত্যাদি মাংস ও পাখির ডিম-বাচ্চা খেকো প্রাণীদের মাথার ওপরে ঘুরে ঘুরে ওড়ে, পিছু নেয় আর তারস্বরে চেঁচাতে থাকে, সুযােগ পেলে ডাইভ মারে। মাঠের অন্যান্য পাখি জেনে ফেলে শত্রুর অবস্থান। বড় জাতের শিকারি পাখিরা এই পাখিদের অনুসরণ করে; বিষধর সাপ, গুইসাপের বাচ্চা তুলে নিয়ে যায় নখরে গেঁথে । বিপদ দূর না হওয়া পর্যন্ত এই পাখিরা সাইরেন বাজিয়েই চলে। সাইরেনের শব্দের সঙ্গে অনায়াসে মিলিয়ে নেয়া চলে ‘হটে যা হটে যা, হটলি হটলি?' নীলকণ্ঠের মতাে এরাও ডিম-বাচ্চা হবার পরে টানটান টেনশনে থাকে সর্বক্ষণ, বিপদের গন্ধ পাওয়া মাত্রই সাইরেন বাজিয়ে দেয় আশপাশটা কাপিয়ে।
সন্ধ্যার আগেই ফুটে গেল সেদিন বাকি ৩টি ডিম। পুরুষ পাখি এর মধ্যে ৬বার খাবার মুখে এনে রেখে গেছে বউয়ের সামনে। বাসায় বসেই বউ তা খেয়েছে। শেষ বাচ্চাটি ফোটার পর বউটি যেন স্বামীকে দেখাতে চাইল বাচ্চাদের মুখ, বাসা থেকে উঠে দাঁড়াল সে। আশ্চর্য! ৪টি বাচ্চাই রয়ে গেল মায়ের বুক-পেটের লােমের ফোকরে । কৌতুহলী বাবা যখন ঘাড় কাত করে দেখতে চাইছে ছানাগুলােকে, তখন টুপুস করে একটি ছানা পড়ল ছাদে। বাবার কী খুশি তখন কী সব যেন বলল ছানাটিকে, কাল আদর। তারপর ডিমের খােলস নিয়ে উড়ে গেল দূরে।
এই পাখিদের ডিম হয় ৯৮% ভাগ ক্ষেত্রে ৪টি, রঙ মেটে-সবুজ।
বহুবার এদের ডিমের মাপ নিয়েছি। বাসা ও ডিম আশপাশের সঙ্গে মিলেমিশে একাকার হয়ে থাকে। এরা বাসা করে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ফায়ুন মাসে এবং চৈত্র থেকে জ্যৈষ্ঠ পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকে। কোনাে কারণে বাসার ডিম নষ্ট হলে স্বল্প সময়ের ব্যবধানে আবারাে ডিম পাড়ে। সে ক্ষেত্রে ৫৬% ভাগ ক্ষেত্রে ডিম হয় দু’টি, ৪০% ভাগ ক্ষেত্রে ৩টি, ৪% ভাগ ক্ষেত্রে ৪টি।
৭০% ভাগ ক্ষেত্রে এরা বাসা করে খােলা মাঠে, চষা ক্ষেতে, ছােট ছােট ঘাসের ওপরে বা মাঠে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা নানারকম ছােট ছােট উদ্ভিদ গুলাের ওপরে। বাসা বাঁধার জায়গা নির্বাচনে বেশি সময় এরা নেয় না। বাসা তৈরি করতে সময় লাগে ৬-১০ দিন। পাখির বাসা বলতে যা বােঝায়, এদের বাসা আদৌ সে রকম নয়। এটা বৃত্তাকারে উপকরণ সাজিয়ে তৈরি। উপকরণ হচ্ছে ছােট ছােট মাটির ঢিল, শামুকের খােল, ইটের খােয়া, পুরনাে দালানের খসে পড়া পলেস্তারার টুকরাে, পাথরের ছােট ছােট কুঁচি, শুকনাে সুপারি, কুমাের বাড়ির ভাঙা মাটির হাঁড়ি-কলসির চাড়া ইত্যাদি। একই উপকরণ দিয়েই বাসা বানায়। মিশেল উপকরণ থাকেই না বলতে গেলে। উল্লেখিত সব উপকরণের বাসা দেখার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। এমনকি, একবার দেখেছিলাম কাচের মার্বেলের উপকরণ—একটি ছেলের উজন চারেক মার্বেল তার বাবা রাগে দুড়ে দিয়েছিল মাঠে, ওই মার্বেল মুখে নিয়েই বাসা সাজিয়েছিল সেই পাখি দম্পতি।
২০% ভাগ ক্ষেত্রে এরা বাসা করে দালানের ছাদে। ১০% ভাগ করে ভেঙে পড়া মােটা গাছের ওপরে, ধসে পড়া কুটোর পালার মাথায় ও অন্যান্য জায়গায়। ঢাকা শহরতলীর মাণ্ডা বিলে আমি ১৯৮৪ সাল থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত একজোড়া পাখিকে মােটামুটি একই জায়গায় বাস করতে দেখেছিলাম। এদের বাসা আজো নিয়মিত হয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এলাকায়, বিশেষ একটি ভবনের ছাদে। সাভার এলাকায় এই পাখি বেশ আছে। ডেইরি ফার্মের বিশাল এলাকাটা এই পাখিদের স্বর্গরাজ্য। নিয়মিত ডিম-বাচ্চা তােলে এখানে। জাবি ক্যাম্পাসের ছাদের বাসার উপকরণ হিসেবে আমি পাথরকুচি ও ইটের টুকরাে দেখেছি। চমৎকার বাসা সাজায় পরিকল্পিতভাবে। আমি পাথরকুচি ও অন্যান্য উপকরণের সংখ্যা যেমন গুনেছি, তেমনি নিয়েছি বাসার মাপ। কী ঢিল, কী অন্যান্য উপকরণ, তার সংখ্যা থাকে ৭০-২০০ পিস। বাসার মাপ ৩৩ X ৩৩ সেন্টিমিটার।
সেই জমিদার বাড়ির ছাদের বাচ্চা ৪টিকে মা-বাবা খাওয়াল ৩ দিন। ছানাগুলাে দেখতে যা সুন্দর না! লম্বা পা, রঙ ধূসর-ছাই, গলা সাদাটে, ঘাড় বাদামি এবং শরীরে কালচে-বাদামি ছিটছােপ ও টান।
লম্বা লম্বা পা। মুরগির ছানার মতাে ছাদের ওপরে হাঁটাহাঁটি করে ওরা। মা-বাবার বিপদ সঙ্কেত পেলেই ছাদে বুক মিশিয়ে পড়ে থাকে চুপচাপ ।
বিপদ কাটার সঙ্কেত পাবার পরেই নড়ে আবার। মা-বাবাকে খাবার মুখে আসতে দেখলেই নিজেদের মধ্যে হুটোপুটি লাগায়, কার আগে কে খাবে, তাই নিয়ে চলে তুমুল প্রতিযােগিতা।
৮ম দিন সকালে মা-বাবা ছাদের ওপরে উড়ে উড়ে ঘুরে ঘুরে চেঁচাতে লাগল। এই নেমে আসে ছানাদের মাথার ওপরে, এই উঠে যায় ওপরে। এই একটু দূরে যায়, এই আসে কাছে। আজ কিন্তু ছুটে এল না নীলকণ্ঠ দম্পতি। কেননা, ওরা বুঝতে পারছে, এটা হচ্ছে ছানাদের ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ার সঙ্কেত। ছানারাও মা-বাবার কঠ, ওড়াউড়ির ধরন দেখে সহজাত প্রবৃত্তিতে বুঝে ফেলল, ছােট এই পরিসর থেকে তাদের লাফিয়ে পড়তে হবে নিচে। তারপর পেয়ে যাবে বিশাল জগত। পিলপিল গায়ে এগিয়ে ছানাগুলাে ঠেলাঠেলি করে এসে দাঁড়াল কার্নিশের ফাঁকে, তাকাল সামনের বিশাল মাঠটির দিকে।
মা-বাবা ওদিকেই উড়ছে, আসছে কাছে। আবারাে যাচ্ছে মাঠের দিকে। বলছে, “ভালদি জলদি, লাফ দে, লাফ দে।' প্রথমে লাফ দিল একটি ছানা। হাস্যকর ভঙ্গিতে সে পড়ল একটা শটিঝােপের মাথায়, তারপর মাটিতে চিৎপটাং। হল না বিশেষ কিছু। বাকি ৩টি ছানাও লাফ দিল। মাবাবা শটিঝোপের পাশে নেমে চেঁচাতে লাগল, ভেরিগুড, ভেরিগুড় । খুব খুশি ওরা। বিশাল দুনিয়া এখন ছানাদের সামনে।
উড়তে শেখার আগ পর্যন্ত এই মাঠে হেঁটে বেড়াবে ওরা মা-বাবার পেছনে পেছনে অথবা সঙ্কেত অনুসরণ করে। মা-বাবা মাটিতে নামবে, খাওয়াবে। আবার হয়তো উড়ে যাবে একটু দূরে খাবার আনতে। এসব সময়ে ছানাদের আশেপাশে যদি মানুষ বা অন্য কোনাে বন্যপ্রাণী এসে পড়ে—আশেপাশে দেখা যায় কোনাে শিকারি পাখি, তাহলে ছুটে আসবে মা-বাবা, চেঁচাবে সমানে, উড়ে উড়ে ঘুরবে। এটা হচ্ছে বিপদ সঙ্কেত। এ সময় বাচ্চারা ঘাস বা ধানের নাড়া অথবা ছােট ছােট মেঠো গাছের ভেতরে ঢুকে ঘাপটি মেরে থাকবে। আশপাশের সঙ্গে মিলেমিশে একাকার হয়ে যাবে।
বিপদ কেটে গেলে আবার সঙ্কেত দেবে মা-বাবা। বাচ্চারা তখন আবার নড়বে, মুরগির ছানার মতাে হাঁটবে। এক জায়গায় বসিয়ে মা-বাবা ওদেরকে খাওয়ায় না বা খাবার চেনায় । মাটিতে বসে সঙ্কেত দেয়। বাচ্চারা হেঁটে সেদিকে এগােয়। দিক নির্দেশনা দিতে এই পাখিরা খুবই দক্ষ। আবার শত্রুকে বিভ্রান্ত করতেও ওস্তাদ। ১৯৯৯ সালের ২৪ এপ্রিলে আমার তিন সঙ্গীসহ ডেইরি ফার্ম এলাকায় এই পাখির ৪টি ছানা অনেক খুঁজে পেয়েছিলাম। ওদের মা-বাবাই আমাদের বলে দিচিহল মাঠের আগাহার ভেতরে ছানা আছে। ছানাগুলাে মাটিতে বুক-পেট মিশিয়ে কী রকম যে একাকার হয়ে গিয়েছিল! অভিজ্ঞ চোখ ছাড়া ওই ছানা খুঁজে পাওয়া সম্ভব ছিল না।
ছানাগুলাের অবস্থানের কাছে পৌছানাে মাত্র ওদের মা-বাবা চেঁচাচ্ছিল ‘নিলরে নিলরে, পালারে পালারে'! ছানাগুলােও পালাচ্ছিল। তখন নজরে পড়ে যায় আমাদের। আমরা ছুটে যাই। ততক্ষণে ছানাগুলাে গা-ঢাকা দিয়েছে। আজকের বাঘ বিশেষজ্ঞ ড. মনিরুল খান তখন জাবি-র ছাত্র। তিনিও ছিলেন সেদিন আমাদের সঙ্গে।
মা-বাবা ওদিকেই উড়ছে, আসছে কাছে। আবারাে যাচ্ছে মাঠের দিকে। বলছে, “ভালদি জলদি, লাফ দে, লাফ দে।' প্রথমে লাফ দিল একটি ছানা। হাস্যকর ভঙ্গিতে সে পড়ল একটা শটিঝােপের মাথায়, তারপর মাটিতে চিৎপটাং। হল না বিশেষ কিছু। বাকি ৩টি ছানাও লাফ দিল। মাবাবা শটিঝোপের পাশে নেমে চেঁচাতে লাগল, ভেরিগুড, ভেরিগুড় । খুব খুশি ওরা। বিশাল দুনিয়া এখন ছানাদের সামনে।
উড়তে শেখার আগ পর্যন্ত এই মাঠে হেঁটে বেড়াবে ওরা মা-বাবার পেছনে পেছনে অথবা সঙ্কেত অনুসরণ করে। মা-বাবা মাটিতে নামবে, খাওয়াবে। আবার হয়তো উড়ে যাবে একটু দূরে খাবার আনতে। এসব সময়ে ছানাদের আশেপাশে যদি মানুষ বা অন্য কোনাে বন্যপ্রাণী এসে পড়ে—আশেপাশে দেখা যায় কোনাে শিকারি পাখি, তাহলে ছুটে আসবে মা-বাবা, চেঁচাবে সমানে, উড়ে উড়ে ঘুরবে। এটা হচ্ছে বিপদ সঙ্কেত। এ সময় বাচ্চারা ঘাস বা ধানের নাড়া অথবা ছােট ছােট মেঠো গাছের ভেতরে ঢুকে ঘাপটি মেরে থাকবে। আশপাশের সঙ্গে মিলেমিশে একাকার হয়ে যাবে।
বিপদ কেটে গেলে আবার সঙ্কেত দেবে মা-বাবা। বাচ্চারা তখন আবার নড়বে, মুরগির ছানার মতাে হাঁটবে। এক জায়গায় বসিয়ে মা-বাবা ওদেরকে খাওয়ায় না বা খাবার চেনায় । মাটিতে বসে সঙ্কেত দেয়। বাচ্চারা হেঁটে সেদিকে এগােয়। দিক নির্দেশনা দিতে এই পাখিরা খুবই দক্ষ। আবার শত্রুকে বিভ্রান্ত করতেও ওস্তাদ। ১৯৯৯ সালের ২৪ এপ্রিলে আমার তিন সঙ্গীসহ ডেইরি ফার্ম এলাকায় এই পাখির ৪টি ছানা অনেক খুঁজে পেয়েছিলাম। ওদের মা-বাবাই আমাদের বলে দিচিহল মাঠের আগাহার ভেতরে ছানা আছে। ছানাগুলাে মাটিতে বুক-পেট মিশিয়ে কী রকম যে একাকার হয়ে গিয়েছিল! অভিজ্ঞ চোখ ছাড়া ওই ছানা খুঁজে পাওয়া সম্ভব ছিল না।
ছানাগুলাের অবস্থানের কাছে পৌছানাে মাত্র ওদের মা-বাবা চেঁচাচ্ছিল ‘নিলরে নিলরে, পালারে পালারে'! ছানাগুলােও পালাচ্ছিল। তখন নজরে পড়ে যায় আমাদের। আমরা ছুটে যাই। ততক্ষণে ছানাগুলাে গা-ঢাকা দিয়েছে। আজকের বাঘ বিশেষজ্ঞ ড. মনিরুল খান তখন জাবি-র ছাত্র। তিনিও ছিলেন সেদিন আমাদের সঙ্গে।
এবার পাখিটির পরিচয় জানা দরকার। তার আগে অতি সংক্ষেপে আমি আমার অভিজ্ঞতার আলােকে এই পাখি সম্পর্কে কিছু বলছি।
১. এদের কণ্ঠস্বর মূলত 'হট্টিটি...টি...টি... হট্রিটি-টিটু। পুরুষের গলা
বেশি চড়া ও মােটা ধরনের। মেয়েটির গলা কম চড়া ও বেশি সুরেলা।
কণ্ঠস্বর শুনে মেয়ে-পুরুষ শনাক্ত করা সম্ভব।
২, বৃষ্টি নামলে ছানারা বৃষ্টি স্নান করে। শিলাপাত হলে বাবা-মা বাচ্চাদের বুকে আগলে বসে। শিলা বড় বড় হলে মা-বাবা সঙ্কেত দিতে দিতে ছানাদের নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যায়—যাতে শিলাপাতে ছানাদের মৃত্যু ঘটে। তবুও মরে।
৩, যদিও ছানাদের খুঁজে পাওয়া দুষ্কর, তবুও মাঝে-মধ্যে শিয়াল খাটাসের পেটে যায়। রাতে ছানারা আশ্রয় নেয় ঝােপালাে জায়গায়।
২, বৃষ্টি নামলে ছানারা বৃষ্টি স্নান করে। শিলাপাত হলে বাবা-মা বাচ্চাদের বুকে আগলে বসে। শিলা বড় বড় হলে মা-বাবা সঙ্কেত দিতে দিতে ছানাদের নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যায়—যাতে শিলাপাতে ছানাদের মৃত্যু ঘটে। তবুও মরে।
৩, যদিও ছানাদের খুঁজে পাওয়া দুষ্কর, তবুও মাঝে-মধ্যে শিয়াল খাটাসের পেটে যায়। রাতে ছানারা আশ্রয় নেয় ঝােপালাে জায়গায়।
৪. পাঁচ ধরনের ডাক আছে এদের কণ্ঠে,
ক) সঙ্গীকে খোঁজার ডাক,
খ) বাসা বাঁধার সময় আনন্দের ডাক ও ডিম-বাচ্চা হবার খুশির ডাক,
গ) বাচ্চাদের নির্দেশনার ডাক, ঘ) বিপদ সঙ্কেত ও উ) বিপদ মুক্তির সঙ্কেত।
৫, এদের গলায় আছে নানান ধরনের করুকজি, তাই সবগুলো উকি ফুটিয়ে তুলতে পারে নিখুঁতভাবে।
৬. নীলকণ্ঠের মতাে রাতেও এদের চিৎকার শােনা যায় বাড়িতে বসে। হয়তাে ছানাদের পাশে বসেছিল, শুনল কোনাে শব্দ বা পেল কোনাে বিপদের গন্ধ, অমনি উড়ে উড়ে ঘুরে ঘুরে গলা ফাটিয়ে চেঁচাতে থাকবে। ওই চিৎকার শুনে উড়ে আসবে নীলকণ্ঠ, সবাই মিলে চিৎকার
করে মাঠ মাত করতে থাকবে।
৭. মাটির ওপর দিয়ে এরা ছুটতে পারে ছন্দময় গতিতে । অত্যন্ত হুশিয়ার আর চতুর পাখি এরা। এদের মিষ্টি ডাকেও আছে তাল-লয়-ছন্দ।
৭. মাটির ওপর দিয়ে এরা ছুটতে পারে ছন্দময় গতিতে । অত্যন্ত হুশিয়ার আর চতুর পাখি এরা। এদের মিষ্টি ডাকেও আছে তাল-লয়-ছন্দ।
লাল লতিকা হঠিটির চোখের সামনে উঁচু মাংসল অংশটি টকটকে লাল-ওকে বলা হয়। লতিকা। লতিকাটির লাল রঙ দুদিকে এগিয়ে চোখের চারপাশে একটি বৃত্ত এঁকেছে—মনে হয় লাল রঙের চশমা পরে আছে পাখিটি। এদের গলা-বুকমাথার তালু ও ঠোটের আগা কালাে। চোখের পাশ থেকে চওড়া সাদা টান নেমে ঘাড় হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে বুকের কিছু অংশসহ পেট ও লেজের তলা। পর্যন্ত। অর্থাৎ চকচকে সাদা।
ডানা বুজানাে অবস্থায় পিঠ ও লেজের উপরিভাগটা চকচকে বাদামি, তাতে জলপাই রঙের আভা। ঠোট লাল। লম্বা লম্বা পা দু'খানা হলুদ! বাসা বাঁধার মৌসুমে এই রঙগুলাে বেশি উজ্জ্বল হয়। এদের শরীর ৩৪-৩৭ সেন্টিমিটার। শুধুমাত্র ঠোট ৪ সেন্টিমিটার। লেজ ১২ সেন্টিমিটার ও ডানা ২৩ সেন্টিমিটার লম্বা। বাল্য-কৈশােরে বন্দুক দিয়ে এই পাখি আমি শিকার করেছি, ডিম ভেজেও খেয়েছি। এদের শরীরের মাপ আমি নিখুঁতভাবে বহুবার নিয়েছি ও নােট করেছি। আগ্রহী শিশু-কিশােরেরা। কখনাে যদি স্বাভাবিকভাবে মৃত এই পাখি পেয়ে যায়, তাহলে প্রত্যেকটা অঙ্গের আলাদা আলাদা মাপ নিয়ে লিখে রাখতে পারে নােট খাতায়। বাচ্চা।
ডানা বুজানাে অবস্থায় পিঠ ও লেজের উপরিভাগটা চকচকে বাদামি, তাতে জলপাই রঙের আভা। ঠোট লাল। লম্বা লম্বা পা দু'খানা হলুদ! বাসা বাঁধার মৌসুমে এই রঙগুলাে বেশি উজ্জ্বল হয়। এদের শরীর ৩৪-৩৭ সেন্টিমিটার। শুধুমাত্র ঠোট ৪ সেন্টিমিটার। লেজ ১২ সেন্টিমিটার ও ডানা ২৩ সেন্টিমিটার লম্বা। বাল্য-কৈশােরে বন্দুক দিয়ে এই পাখি আমি শিকার করেছি, ডিম ভেজেও খেয়েছি। এদের শরীরের মাপ আমি নিখুঁতভাবে বহুবার নিয়েছি ও নােট করেছি। আগ্রহী শিশু-কিশােরেরা। কখনাে যদি স্বাভাবিকভাবে মৃত এই পাখি পেয়ে যায়, তাহলে প্রত্যেকটা অঙ্গের আলাদা আলাদা মাপ নিয়ে লিখে রাখতে পারে নােট খাতায়। বাচ্চা।
খুঁজে বের করার চেষ্টা তারা করতে পারে। কী সুন্দর বাচ্চা! তবে, ছেড়ে দিতে হবে আবার। পাখি আর পাখির ছানারা কত সুন্দর, তাই না? ছানারা উড়তে শেখে ৩০ দিনে।
খাদ্য : পােকামাকড়, কীটপতঙ্গ। শস্যবীজ, কচিঘাস, কেঁচো ইত্যাদিও খায়। বাচ্চাদের জল খাওয়ার জন্য ওরা জলে বুক ভিজিয়ে আনলে বাচ্চারা ভেজা লােম চুষে জল খায়।