পাখিদের কথা

পাখিদের কথা
পাখিদের কথা

পাখিদের কথা

বাংলাদেশে নানান রকম সুন্দর সুন্দর পাখি আছে। কিছু পাখি ছােট, কোনাে কোনােটি মাঝারি, আবার বেশকিছুপাখি বড়সড়। সবাইকে সব সময় দেখতে পাওয়া যায় না। সবাই সব জায়গায় থাকেও না। সবাই সব সময় ডাকাডাকিও করে না।

কিছু কিছু পাখিকে আমরা পথ-ঘাটে চলার সময় দেখতে পাই। দেখতে পাই বাড়ির আশেপাশে। যেমন – দোয়েল, ফিঙে, কসাই, টুনটুনি, বুলবুলি, শালিক ইত্যাদি। কিছু কিছু পাখিকে আবার বনবাগানে না গেলে দেখা যায় না। যেমন-শ্যামা, লেজনাচুনে, নওরঙ ইত্যাদি। কিছু কিছু পাখি আছে খুবই চালাক, মানুষ দেখলেই যারা পালাতে চায়। আবার কিছু কিছু পাখি আছে, যারা মানুষকে। তেমন ভয় পায় না।।
কিছু কিছু পাখি আছে, যারা বাইরের দেশ থেকে বিশেষ বিশেষ ঋতুতে বাংলাদেশে আসে, আবার ফিরে যায়। ওরা বাংলাদেশে বাস করে না। ওরা হচ্ছে পর্যটক পাখি। যেসব পাখি আমাদের দেশে স্থায়ীভাবে থাকে, বাসা। বানায় ও ডিম-বাচ্চা তােলে, ওরাই হচ্ছে বাংলাদেশের পাখি।

বাংলাদেশের পাখিদের যেমন বিচিত্র-বাহারি রঙ রয়েছে, তেমনি গলার স্বরও নানান রকম। বিচিত্র স্বরে সবাই ডাকাডাকি করে গান গায়। পাখিগুলােকে দেখলে যেমন আমাদের চোখ জুড়িয়ে যায়, তেমনি ওদের মিষ্টি গলার ডাকাডাকি বা গান শুনলে মন ভরে যায়। আসলে পাখিরা হচ্ছে প্রকৃতির উড়ন্ত-দুরন্ত সুন্দর। প্রকৃতি-পরিবেশের সৌন্দর্য ওরা বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়। শুধু তাই নয়, পাখিরা নানান রকম, নানান ঢঙের সুন্দর সুন্দর বাসা করে। অসম্ভব সুন্দর সুন্দর ডিম পাড়ে। পাখির ছানারাও দেখতে হয় খুবই সুন্দর। আর পাখিদের নামও কত না সুন্দর ! সহেলি, কমলাবউ, হলদেবউ, ভরত, পাপিয়া, মুনিয়া, খঞ্জন, নীলকণ্ঠ, দুধরাজ আরও কত কি !

বিভিন্ন পাখির রয়েছে বিভিন্ন রকমের আচার-আচরণ। একটি পাখি কী স্বরে ডাকে বা গান গায়, কী কৌশলে বাসা বাধে, কীভাবে ডিমে তা দেয় ও বাচ্চাদের খাওয়ায়, তা পর্যবেক্ষণের মধ্যে রয়েছে অনাবিল আনন্দ। পাখিদের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখারও আছে মানুষের।

পাখিরা শুধু মানুষের চোখ-মন ভরায় না, ওদের সৌন্দর্য ও গান দিয়ে ওরা মানুষের মস্তবড় উপকারও করে থাকে। ক্ষতিকর নানান রকম পােকামাকড়, কীটপতঙ্গ, সাপ ও ইদুর খেয়ে ওরা ফসল ও গাছপালার মহা উপকার করে। প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় ওরা অপরিসীম ভূমিকা রাখে। পাখিরা যে মানুষ তথা প্রকৃতি ও পরিবেশের কত বড় বন্ধু তা বর্ণনা করে শেষ করা যাবে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার বাংলাদেশে সব রকমের পাখি শিকার নিষিদ্ধ করেছেন। এতেই বােঝা যায় পাখিরা দেশের তথা মানুষের কত বড় উপকারী বন্ধু। বাংলাদেশের পাখিরা যেমন সুন্দর তেমনি সুন্দর ওদের কণ্ঠস্বর।

আমরা কি কখনাে সােচ্চার হব না নিরীহ সুন্দর ওই পাখিগুলােকে বাঁচানাের জন্য? আমাদের শিশুরা কি শুনবে না ঘুমঘুম, দোয়েল, ফিঙে, কসাই, টুনটুনি, বুলবুলি, শালিক পাখির ডাক, দেখবে না ওদের? সুন্দর ও নিরীহ পাখিদের বাঁচানাের জন্য সামাজিক আন্দোলন গড়ে তােলা খুবই জরুরি।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url